আনঅফিসিয়াল মোবাইল কিভাবে অফিসিয়াল করতে হবে তা নিয়ে অনেকে চিন্তায় পড়ে গেছে। কারন আনঅফিসিয়াল মোবাইল গুলো বন্ধ হয়ে যাবে এমনটাই শোনা যাচ্ছে। আসলেই কি বন্ধ হবে? যদি রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করার সুযোগ থাকে তা কিভাবে? এমন সব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই এই পোস্টটি।
আনঅফিসিয়াল মোবাইল কোনগুলো
প্রথমে বলে নিই অবৈধ বা আনঅফিসিয়াল মোবাইল কোনগুলো। যেসব মোবাইল কর ফাঁকি দিয়ে বাইরে থেকে দেশে আনা হয় সেগুলো আন অফিসিয়াল মোবাইল। সাধারনত অফিসিয়াল মোবাইলের তুলনায় আনঅফিসিয়াল মোবাইলের দাম কম থাকে। তাই অনেকে এইসব মোবাইল কিনে থাকে। এই আনঅফিসিয়াল মোবাইলের কারনে সরকার বড় একটি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। আর এই মোবাইলগুলোর কোন তথ্য বিটিআরসি'র ডাটাবেসে থাকে না। তাই এগুলোকে অবৈধ মোবাইল বলা হয়।
আনঅফিসিয়াল ফোন অফিসিয়াল হলে লাভ
বর্তমানে সরকারের এক নীতিমালা অনুযায়ী সকল অনিবন্ধিত মোবাইল বন্ধ হয়ে যাবে। এটি করার পিছনে কিছু কারন আছে। এর ফলে দেশে আর অবৈধ মোবাইল আসবে না। যার কারনে সরকার বড় এটি রাজস্ব পাবে। এর আরেকটি বড় সুবিধা হলো আপনি যদি অফিসিয়াল মোবাইল ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ফোনের সকল তথ্য BTRC (BTRC mobile registration) এর ডাটাবেসে জমা থাকবে। যার কারনে আপনার মোবাইল যদি কখনো চুরি হয়ে যায় তাহলে তা লক করে দেয়া যাবে। ফলে মোবাইলটি কেউ আর ব্যবহার করতে পারবে না। এতে করে মোবাইল চুরি অনেকাংশে কমে যাবে।
অফিসিয়াল মোবাইল চেনার উপায়
এখনো অনেকে জানে না কিভাবে অফিসিয়াল মোবাইল চেনা যায়। এটা একেবারে সহজ। আপনি আপনার ফোনের IMEI নাম্বার দিয়ে সহজেই জেনে নিতে পারবেন আপনার মোবাইলটি বৈধ বা অফিসিয়াল কি না। এই বিষয়ে আমার আগের একটি পোস্ট আছে। আপনি চাইলে আমার আগের বৈধ মোবাইল চেনার উপায় নিয়ে করা পোস্টটি দেখে নিতে পারেন। btrc imei registration
আনঅফিসিয়াল মোবাইল অফিসিয়াল করার উপায়
আপনার ফোনটি যদি অফিসিয়াল না হয় এবং আপনার ফোনটি যদি ৩০ জুন ২০২১ সালের আগে কিনেছেন বা ব্যবহার করছেন তাহলে আপনাকে নতুন করে এটি রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না। কারন এটি অটোমেটিকভাবে রেজিস্ট্রেশন হয়ে বৈধ বা অফিসিয়াল মোবাইল হয়ে যাবে। IMEI দিয়ে চেক করার সময় যদি এটি ডাটাবেসে পাওয়া যায়নি বলে তাহলে অপেক্ষা করুন। কারন বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ এই সকল ফোনের তথ্য তাদের ডাটাবেসে যুক্ত করছে। তাই আপনারটিও যুক্ত হতে একটু সময় লাগতে পারে। তবে চিন্তার কারন নেই। কিছুদিনের মধ্যে আপনার ফোনটি ডাটাবেসে যুক্ত হয়ে যাবে। এমনকি আপনার ফোনটি যদি ৩০ জুনের মধ্যে দেশের বাইরে থেকে আনেন সেটিও অটোমেটিকভাবে যুক্ত হয়ে যাবে।
এখন আপনি হয়তো ভাবছেন তাহলে কোন ফোন গুলো অফিসিয়াল করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। দুই ধরনের ফোন আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। প্রথমত আপনি যদি ১লা জুলাই এর পর কোন ফোন কিনতে চান তাহলে আপনি ফোন কেনার আগে আইএমইআই দিয়ে যাচাই করে নিবেন যে ফোনটি অফিসিয়াল কিনা। অফিসিয়াল না হলে না কেনাটাই শ্রেয় হবে। তবে আপনি যদি আনঅফিসিয়াল ফোন কিনে থাকেন তাহলে আপনাকে এটি BTRC এর ওয়েব সাইট neir.btrc.gov.bd এ গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। নিবন্ধনের জন্য প্রথমে এই সাইটে যেতে হবে।
তারপর "নিবন্ধন করুন" বাটনে ক্লিক করুন। তারপর আপনাকে আপনার নাম, মোবাইল নাম্বার ও একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে নিবন্ধন করুন এ ক্লিক করতে হবে। এবার আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি পিন পাঠানো হবে। এই পিনটি এখানে দিয়ে দিবেন। এবার আপনাকে লগইন করতে বলবে। আপনার মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করে নিন। লগইন করার পর এখানে "বিশেষ নিবন্ধন" একটি অপশন পাবেন। এখানে ক্লিক করবেন। তারপর আপনার IMEI নাম্বারটি দিবেন এবং নিচে সংযুক্তির ধরনে পাসপোর্ট বা ট্যাক্স রশিদ বা উপহার প্রাপ্তি রশিদ( এখানে আপনি মোবাইলটি ক্রয়ের রশিদ ব্যবহার করতে পারবেন) এই তিনটি থেকে যেকোন একটি সিলেক্ট করে উক্ত ডকুমেন্টটি আপলোড করে দিন। তারপর "জমা দিন" এ ক্লিক করুন। এবার আপনার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ। এখন বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ আপনার ডকুমেন্ট যাচাই করে সব ঠিক থাকলে আপনার মোবাইলটি তথা IMEI নাম্বারটি তাদের ডাটাবেসে যুক্ত করে দিবে।
দ্বিতীয়ত কেউ যদি বিদেশ থেকে কোন ফোন আনেন বা কেউ যদি আপনার জন্য দেশের বাইরে থেকে ফোন আনে তাহলে উক্ত মোবাইলটি সিম লাগিয়ে উপরের দেখানো নিয়মে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। এখানে একটি কথা বলে রাখি কেউ যদি বিদেশ থেকে একসাথে ২টির বেশি মোবাইল আনেন তাহলে তাকে প্রায় ৫৭% ট্যাক্স দিতে হবে। অর্থাৎ ২ টা পর্যন্ত ট্যাক্স ছাড়া আনতে পারবেন। এর বেশি হলে ট্যাক্স দিতে হবে। তারপর রেজিস্ট্রেশনের সময় ট্যাক্স রশিদ সাবমিট করতে হবে।
এভাবে আপনি খুব সহজেই আপনার হ্যান্ডসেটটি নিবন্ধন করে নিতে পারবেন( how to register imei number in bangladesh) । পোস্টটি সবার সাথে শেয়ার করে সবাইকে জানিয়ে দিন। ধন্যবাদ।।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনার মন্তব্যটি আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ।